বাংলাদেশের (ক্যাব) তরফ থেকে বলা হয়েছে, আইনগত দিক বিবেচনা করলে এলপিজি অপারেটরদের এই আবেদন আমলে নেওয়ার যৌক্তিকতা নেই।
কমিশনের চেয়ারম্যান আব্দুল জলিলের সভাপতিত্বে শুনানিতে কমিশনের সদস্য, অপারেটর প্রতিনিধি, ভোক্তা অধিকার প্রতিনিধি ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিকে এবং সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
কমিশন গঠিত কারিগরি কমিটির সুপারিশে বলা হয়, সৌদি সিপি অনুযায়ী সেপ্টেম্বর মাসের এলপিজির সরবরাহ ব্যয় ৯১.৪৮ টাকা প্রতিকেজি হিসেবে ১২ কেজির সিলিন্ডারের দাম এক হাজার ৯৭ টাকা ৭৬ পয়সা করার সুপারিশ করা হয়েছে।
কমিশনের কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি বলছে, এলপিজি বোতলজাত এবং মজুতে চার্জ অপরিবর্তিত রাখতে চায়। তবে পরিবেশক এবং খুচরা বিক্রেতার কমিশন বৃদ্ধির পক্ষে মত দিয়েছে কারিগরি কমিটি।
গত ১২ জানুয়ারি এলপিজির প্রথম দফা শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ওই শুনানির পর এপ্রিল মাসে প্রথমবার এলপিজির দাম নির্ধারণ করে কমিশন। কিন্তু কমিশন ঘোষিত দামে এলপিজি বিক্রি করছে না অপারেটররা। তারা দাবি করছে, এলপিজির দাম বৃদ্ধি যথাযথ হয়নি।
কমিশনের শুনানিতে ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, বাজারে একটি ১২ কোজি এলপিজির সিলিন্ডারের দাম এক হাজার ১০০ টাকা। সেখানে সমপরিমাণ এলপিজির দাম ১৩৮০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে। এর জবাবে অপারেটররা বলছেন, এই দামে এলপিজি বিক্রি করা লোকসান। তাই দাম বৃদ্ধির আবেদন করেছেন।
শুনানিতে অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, আদালতে এ বিষয়ে একটি মামলা চলছে। এখন এলপিজির দামের বিষয়টি আদালতে নিষ্পত্তি হবে। ফলে এই শুনানিতে ভোক্তারা কিছুই পাবে না। তিনি বলেন, কমিশনে ২৯ মে থেকে ৩ জুনের মধ্যে আবেদন করেছে অপারেটররা। কিন্তু কমিশনের আদেশের ৩০ দিনের মধ্যে আবেদন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সঙ্গত কারণে এই আবেদন গ্রহণের যৌক্তিকতা নেই বলে শুনানিতে তিনি জানান।
বসুন্ধরা এলপি গ্যাসের নির্বাহী জাকারিয়া জালাল বলেন, সরকারি এলপিজি বিক্রিতে অপারেটরদের কমিশন ৫০ টাকা, সেখানে বেসরকারি অপারেটরদের ২৪ টাকা কমিশন দেওয়া হয়। অন্যদিকে সরকারি এলপিজির রিটেইলারদের ৫০ টাকা কমিশন, বেসরকারি এলপিজির রিটেইলারদের ২৭ টাকা কমিশন দেওয়া হয়। মাত্র ২৪ টাকা কিংবা ২৭ টাকা কমিশন দিয়ে একজন ব্যবসায়ীর পক্ষে ব্যবসা করা সম্ভব কিনা জানতে চান তিনি।
কমিশন চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল শুনানিতে বলেন, আমরা দিনভর অপারেটর, ভোক্তা প্রতিনিধিদের কথা শুনেছি। এখন কমিশন এসব বিষয় বিশ্লেষণ করে একটি সিদ্ধান্ত জানাবে।
শুনানিতে বলা হয়, প্রতিমাসে অটোগ্যাসের দাম নির্ধারণের ফলে ভোক্তাদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে।
তারা বিষয়টিকে ভালোভাবে গ্রহণ করছেন না। ফলে সারাবছরের জন্য ভোক্তাদের একটি দামে অটোগ্যাস দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। তবে সৌদি সিপি অনুযায়ী এলপিজির দর ওঠা নামা করার ভিত্তিতে একটি দাম প্রস্তাব করা হয়।
ব্যবসায়ীরা বলছেন সৌদি সিপিতে এলপিজির দাম টন প্রতি ৫০০ ডলার হলে প্রতি লিটার এলপিজির দাম হবে ৪৫ টাকা। সৌদি সিপিতে ৫০১ থেকে ৬০০ হলে লিটার প্রতি দাম হবে ৫০ টাকা, ৬০১ থেকে ৭০০ ডলার দাম হলে ৫৫ টাকা লিটার প্রতি এলপিজি বিক্রি করতে চায় তারা। ব্যবসায়ীরা বলছেন টেকসই উন্নয়নের জন্য অন্তত দুই বছর পর পর এই দাম পরিবর্তন করা যেতে পারে।
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন
No comments:
Post a Comment