শুরু হয়েছে ইতিহাস সৃষ্টি হওয়ার মাস জুন। বুধবার (১ জুন) শেষ হলে থাকবে বাকি ২৩ দিন।২৫ জুন উদ্বোধন হবে স্বপ্নের সেতু পদ্মার। এ আয়োজনকে ঘিরে কর্মব্যস্ত দিন পার করছেন প্রকল্প–সংশ্লিষ্টরা।
সেতুর দুই প্রান্তে শেষ সময়ের কাজ করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকরা। তারা জানিয়েছেন, আগামী চার-পাঁচদিনের মধ্যে সেতুর ৪১৫টি ল্যাম্প পোস্টে বাতি জ্বলবে। সেতু বিভাগের বিদ্যুৎ প্রকৌশলীরা সে লক্ষ্যে কাজ করছেন।
সেতু বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী সাদ্দাম হোসেন বুধবার দুপুরে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
সেতু বিভাগ ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্রে জানা গেছে, ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পদ্মা সেতুতে ৩২৮টি ও দুই প্রান্তের ৩ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার উড়ালপথে (ভায়াডাক্ট) ৮৭টি ল্যাম্পপোস্ট বসানো হয়েছে। সব মিলিয়ে ৯ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার আলোকিত করতে ৪১৫টি ল্যাম্পপোস্ট বসানো হয়েছে।
গত ১৮ এপ্রিল ল্যাম্প পোস্টগুলোয় বাতি বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। এরপর বিদ্যুৎ–সংযোগের কাজ শুরু হয়। এ কাজ শেষ হতে আর ৪-৫ দিন সময় লাগবে।
ল্যাম্প পোস্টে বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়ার কেবল স্থাপনের পাশাপাশি সেতুতে সাইন, সংকেত ও মার্কিংয়ের কাজ চলছে। সেতুর সীমানা দেয়ালের ওপর বসানো হচ্ছে স্টিলের রেলিং।
এর আগে গত ২৪ মে জাজিরা প্রান্তের ৪২ নম্বর খুঁটিতে সেতুর সাব-স্টেশনে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়। শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সাব-স্টেশন থেকে ৮০ কিলোওয়াট বিদ্যুতের সংযোগ কেবল স্থাপন করা হয়। এ ছাড়া সেতুতে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করতে আটটি ফিডার স্থাপন করা হয়েছে। যার মধ্যে চারটি মেইন ফিডার ও ৪টি সাবফিডার।
কেবল লাগানোর কাজ শেষ হলে সাব-স্টেশন থেকে ফিডারে বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়া হবে। তারপর ল্যাম্প পোস্টে সংযোগ দেওয়া হবে। এর পরই পরীক্ষামূলকভাবে সেতুতে আলো জ্বালানো হবে।
আরও জানা গেছে, পদ্মা সেতুতে ৪১৫টি ল্যাম্পপোস্ট ছাড়াও আর্কিটেকচারাল লাইট জ্বালানো হবে। বিভিন্ন জাতীয় দিবসে, ঈদ ও পূজাসহ বিভিন্ন জাতীয় উৎসবের নকশা করে এসব লাইট জ্বালানো হবে। সেতুর খুঁটির পানির অংশ থেকে রোডওয়ে স্লাব পর্যন্ত সেতু ও ভায়াডাক্টে এসব লাইট অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে জ্বালানো হবে। সেতু চালু হওয়ার পর কোরবানির ঈদের আগে আর্কিটেকচারাল লাইটিংয়ের কাজ শেষ করা হবে।
সেতু বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী সাদ্দাম হোসেন বলেন, সেতুর সাব-স্টেশনে বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়া হয়েছে। ওই সংযোগ এখনও সেতুর ওপরে আনা হয়নি। ল্যাম্পপোস্টে কেবল লাগানোর কাজ চলছে। তা শেষ হতে চার-পাঁচ দিন সময় লাগবে।
সংশ্লিষ্ট-সূত্রে জানা গেছে, সেতু আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের জন্য ম্যুরাল ও ফলক নির্মাণের কাজ চলছে মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তে। তার পাশে মনোমুগ্ধকর পরিবেশ সৃষ্টি করতে ফোয়ারা ও ইলিশের ভাস্কর্য নির্মাণ করা হচ্ছে। ট্রাকের ওজন পরিমাপ করার জন্য ওজন স্কেল নির্মাণ করা হচ্ছে। মূল সেতুতে পিচ ঢালাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে গত মাসে। যানবাহন চলাচলের জন্য সেতুটি প্রস্তুত হওয়ায় আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। এর পর থেকেই সেতুটি সম্পূর্ণ প্রস্তুত করার জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
সূত্র: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
No comments:
Post a Comment