দিনাজপুরের বোচাগঞ্জে শিশু সুমাইয়াকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছেন মা ও দাদি। এতে ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন দাদি। আর শিশুটির মা পুলিশের রিমান্ডে দায় স্বীকার করেছেন।
মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় দিনাজপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-৩ (বোচাগঞ্জ) এর বিচারক শারমিন আক্তারের কাছে দোষ স্বীকার করে দাদি রীনা বেগম (৫০) জবানবন্দি দেন। শিশুটির মা মাসতারা বেগমও (২০) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেবেন।
বোচাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহামুদুল হাসান বলেন, ‘বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) শিশুটির মা মাসতারা বেগমকে জবানবন্দি দেওয়ার জন্য আদালতে তোলা হবে।’
জানা গেছে, ৫ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে বোচাগঞ্জ উপজেলার নাফানগর ইউনিয়নের ডহুরা মেম্বারপাড়া গ্রামের সোহেল রানার স্ত্রী মাসতারা বেগম ঘুমিয়েছিলেন। এ সময় কয়েকজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি বাড়িতে প্রবেশ করে ওড়না দিয়ে মুখ পেঁচিয়ে অচেতন করে আড়াই মাসের শিশুকে নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে পরিবারের লোকজন বিষয়টি এলাকাবাসীকে জানালেও শিশুটিকে পাওয়া যায়নি। পরদিন সকালে কচুরিপানায় ঢাকা একটি পুকুর থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ওই দিনই নিহত শিশুর মা মাসতারা বেগম বাদী হয়ে বোচাগঞ্জ থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশের সন্দেহ হলে পুলিশ নিহত শিশুর মা-দাদিকে আটক করে। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মাসতারা বেগমের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ডে শিশুটির হত্যার বর্ণনা দেন।
পুলিশের কাছে শিশুটির মা বলেন, ‘৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বাড়িতে একটি চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে বউ ও শাশুড়ির মধ্যে ঝগড়া বাধে। এক পর্যায়ে নিজের কোল থেকে বউ মাসতারা বেগমের দিকে আড়াই মাসের শিশু সুমাইয়াকে ছুড়ে মারেন দাদি। এ সময় সুমাইয়াকে ধরতে অপ্রস্তুত থাকায় শিশুটি নিচে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে মারা যায়। পরবর্তী সময়ে বউ ও শাশুড়ি যোগসাজশ করে বাড়ির পাশের পুকুরে শিশুর মরদেহ ফেলে দেয়। পরে তারা আশপাশের লোকজনকে জড়ো করে জানায়, শিশু সুমাইয়াকে বাড়ি থেকে কে বা কারা ছিনতাই করে পালিয়ে গেছে। পরদিন সকালে বাড়ির পাশের পুকুর থেকে শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।’
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন
No comments:
Post a Comment